সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে গ্রেপ্তার করতে রেড এলার্ট জারির যে অনুরোধ গেছে, তাতে সাড়া দিয়ে ইন্টারপোল যদি ব্যবস্থা নেয়; সেক্ষত্রে সরকারের সংশ্লিষ্ট বিভাগ চাইলে ভারতের সঙ্গে কূটনৈতিক চ্যানেলে যোগাযোগ করবে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।
বৃহস্পতিবার বিকেলে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে অনুষ্ঠিত সাপ্তাহিক মিডিয়া ব্রিফিংয়ে এক প্রশ্নের জবাবে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জনকূটনীতি বিভাগের মহাপরিচালক তৌফিক হাসান এই কথা বলেন।
তিনি বলেন, “এটি রাজনৈতিক বিষয়। রেড এলার্ট জারি হলে সংশ্লিষ্ট কোনো বিভাগ যদি বলে তাহলে আমরা এ বিষয়ে ব্যবস্থা নিতে পারি। তবে এখন পর্যন্ত আমাদের কাছে এ ধরনের কোনো বিষয় আসেনি।”
রেড অ্যালার্ট জারির জন্য আন্তর্জাতিক পুলিশ সংস্থা ইন্টারপোলের কাছে অনুরোধ করে চিঠি পাঠিয়েছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের চিফ প্রসিকিউটরের কার্যালয়।
গত ১২ নভেম্বর আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের কাছে এ-সংক্রান্ত আবেদনও করেন চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম।
সম্প্রতি তিনি বলেন, “তিনি (শেখ হাসিনা) যেহেতু মানবতাবিরোধী অপরাধ সংগঠনের অভিযোগে অভিযুক্ত, তার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা পেন্ডিং আছে, কিন্তু বাংলাদেশের জুরিসডিকশনের বাইরে তিনি চলে গেছেন, সে কারণে আন্তর্জাতিক পুলিশিং সংস্থা হিসেবে ইন্টারপোল যাতে তাকে গ্রেপ্তার করার ব্যবস্থা নেয় এবং তার ব্যাপারে অন্তত রেড অ্যালার্ট জারি করে, সেই ব্যাপারে আমরা অনুরোধ পাঠিয়েছি।”
সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভারতে অবস্থান করে মোবাইল ব্যবহার করছেন এবং বিভিন্ন বক্তব্য দিচ্ছেন বলে যে অভিযোগ রয়েছে, সেটি পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় কীভাবে দেখছে, তা জানতে চাইলে তৌফিক হাসান বলেন, “এ বিষয়ে আমরা ঢাকায় নিযুক্ত ভারতীয় হাইকমিশনের মাধ্যমে কূটনৈতিক চ্যানেলে আমাদের বক্তব্য জানিয়েছি। উনাকে (শেখ হাসিনা) এ ধরনের বক্তব্য না রাখতে অনুরোধ করা হয়েছে।”
এর বিপরীতে ভারত সরকারের বক্তব্য কী জানতে চাইলে তিনি বলেন, “এখনও ভারত সরকারের কোনো বিবৃতি বা প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি।”
ভারতের ভিসা-সংক্রান্ত জটিলতার বিষয়ে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় কোনো ভূমিকা নিয়েছে কি না, জানতে চাইলে মহাপরিচালক বলেন, “ভারতের ডাবল এন্ট্রি ও মেডিকেল ভিসা দ্রুত দেওয়ার অনুরোধ করা হয়েছে।”
ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানে ৫ আগাস্ট পতন হয় শেখ হাসিনা সরকারের, তিনি ভারতে চলে যান। ৮ আগস্ট গঠিত অন্তর্বর্তী সরকার আগের সরকারের প্রধানসহ আওয়ামী লীগের বিভিন্ন স্তরে হত্যা, গণহত্যা, ঘুম ও নির্যাতনে জড়িতদের বিচারের আওতায় আনার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে।
পুনগর্ঠিত আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে এরই মধ্যে শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে একাধিক অভিযোগ আনা হয়েছে। ট্রাইব্যুনালের কার্যক্রমের অংশ হিসেবে চিফ প্রসিকিউটরের কার্যালয় থেকে শেখ হাসিনাকে গ্রেপ্তারে ইন্টারপোলে চিঠি দেওয়া হয়েছে।
আপনার মতামত লিখুন :