মধ্যপ্রাচ্যে পুনরুত্থানের আশঙ্কা দেখা গেছে সন্ত্রাসী গোষ্ঠী ইসলামিক স্টেটের। চলতি সপ্তাহে ইরানে দুটি বোমা হামলার ঘটনা সেদিকেই ইঙ্গিত দিচ্ছে। শুক্রবার গোষ্ঠীটি হামলার দায় স্বীকার করেছে।
বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন, মার্কিন অভিযানে মধ্যপ্রাচ্যে আসলে ইসলামিক স্টেট দুর্বল হয়েছে, কিন্তু নির্মুল হয়নি।
২০১৪ সালে ইরাকের ঐতিহাসিক আল-নুরি মসজিদের মিম্বর থেকে খেলাফতের ঘোষণা দিয়েছিল ইসলামিক স্টেটের প্রধান আবু বকর আল-বাগদাদি। পরবর্তী কয়েক বছরে ইসলামিক স্টেট লক্ষাধিক মানুষের ওপর সন্ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করে এবং ইরাক ও সিরিয়ার সম্মিলিত ভূখণ্ডের কিছু অংশের ওপর নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা করে। এর যোদ্ধারা বারবার উভয় দেশের সেনাবাহিনীকে পরাজিত করেছে এবং বিশ্বের কয়েক ডজন শহরে হামলা চালিয়েছে বা অনুপ্রাণিত করেছে। পাঁচ বছর পর উত্তর-পশ্চিম সিরিয়ায় মার্কিন বিশেষ বাহিনীর অভিযানে বাগদাদি নিহত হন। তার পতনের মধ্য দিয়ে ইরাকে তথাকথিত খিলাফতের পতন ঘটে।
মধ্যপ্রাচ্য ফোরামের একজন ফেলো আয়মেন জাওয়াদ আল-তামিমি রয়টার্সকে বলেছেন, ইরানে চলতি সপ্তাহের হামলা একটি ইঙ্গিত যে, গোষ্ঠীটি তার শক্তি এবং প্রাসঙ্গিকতা পুনর্গঠন করতে চাইছে।
তিনি বলেছেন, ‘গোষ্ঠীর লক্ষ্য সবসময় একই থাকে: আঞ্চলিক খিলাফত প্রতিষ্ঠার জন্য গ্রুপের সব শত্রুর বিরুদ্ধে জিহাদ চালানো, যা শেষ পর্যন্ত সমগ্র বিশ্বকে শাসন করবে।’
ইসলামিক স্টেট তার খেলাফতের পতন এবং মধ্যপ্রাচ্যে অন্যান্য বিপর্যয়ের পর থেকে কৌশল পরিবর্তন করেছে।
ইরাক সরকারের এক নিরাপত্তা উপদেষ্টার মতে, মার্কিন অভিযানের পর গোষ্ঠীটির যোদ্ধারা আন্ডারগ্রাউন্ডে চলে যায় এবং স্লিপার সেল গঠন করে। এই সেলগুলো হামলা চালিয়ে দ্রুত পালিয়ে যাওয়ার কৌশল অবলম্বন করে। গোষ্ঠীটির বিদেশী যোদ্ধারা ইরাক থেকে আফগানিস্তান, সিরিয়া এবং পাকিস্তানের মতো দেশে পালিয়ে যায়। এদের বেশিরভাগই ইসলামিক স্টেটের খোরাসান শাখায় যোগ দিয়েছে। তারা আফগানিস্তান ও পাকিস্তানের সঙ্গে লাগোয়া ইরান সীমান্তে সক্রিয়।
গত বছর জাতিসংঘের একটি প্রতিবেদনে ধারণা করা হয়েছিল, মিশরের সিনাই প্রদেশে ইসলামিক স্টেটের অনুগত ৮০০ থেকে এক হাজার ২০০ যোদ্ধা থাকতে পারে। লিবিয়ায় গোষ্ঠীটি দুর্বল হলেও বর্তমানে দেশটির চলমান সংঘাতকে কাজে লাগাতে পারে।
আপনার মতামত লিখুন :