পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়ায় এসে স্বামীর দেখা না পেয়ে নিরাশ হয়ে ফিরে গেলেন ভারতের এক তরুণী। গত বুধবার (২৯ নভেম্বর) ভারত থেকে বাংলাদেশে আসেন রিয়া বালা নামের ওই তরুণী। শনিবার (২ ডিসেম্বর) বিকেলে ভারতে ফিরে যান তিনি।
রিয়া বালা ভারতের বর্ধমান জেলার অম্বিকা কালনা এলাকার শ্যামল কান্তি বালার মেয়ে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে এই তরুণী প্রেমে পড়েন তেঁতুলিয়ার উপজেলার দেবনগর ইউনিয়নের শিবচন্ডী এলাকার অখিল চন্দ্র রায়ের ছেলে বিটু রায়ের।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, প্রেমের এক পর্যায়ে বিটু রায় ভারতের জলপাইগুড়িতে গিয়ে প্রেমিকা রিয়া বালার সঙ্গে দেখা করেন। গত ২১ সেপ্টেম্বর জলপাইগুড়ি জেলার রাজগঞ্জ থানার শিকারপুর এলাকায় পিসির বাড়িতে রিয়া বালাকে বিয়ে করেন বিটু রায়। বিয়ের পর তারা সেখানে ১ মাস বাড়ি ভাড়া নিয়ে থাকেন। এক পর্যায়ে দেশে ফিরে আসেন বিটু রায়। দেশে ফিরে রিয়া বালার সঙ্গে যোগাযোগ বন্ধ করে দেন বিটু। এমনকি বিয়ের বিষয়টিও অস্বীকার করতে থাকেন। উপায় না পেয়ে স্বামীর খোঁজে গত ২৯ নভেম্বর বাংলাবান্ধা ইমিগ্রেশন দিয়ে পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়ার বিটুর বাড়িতে যান রিয়া বালা।
এদিকে, রিয়া বালার আসার আগেই বাড়ি ছেড়ে পালিয়ে যান বিটু। ১ ডিসেম্বর স্বামীর বাড়িতে নিরাপত্তাহীনতার আশঙ্কায় তেঁতুলিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে ফোন করে সহযোগিতা চান ওই তরুণী। পরে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা স্থানীয় নারী ইউপি সদস্যের সহযোগিতায় তাকে উদ্ধার করে তেঁতুলিয়া থানার নারী ও শিশু সেলে থাকার ব্যবস্থা করেন। এ সময় বিটুর বাবা অখিল চন্দ্রও সঙ্গে ছিলেন। তিনি ছেলে ফিরে আসলে তাকে নিয়ে ভারতে গিয়ে বিষয়টি সমাধানের আশ্বাস দেন। শনিবার দুপুরে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ফজলে রাব্বি রিয়া বালাকে বাংলাবান্ধা জিরো পয়েন্ট পর্যন্ত পৌঁছে দেন।
রিয়া বালা জানান, তার সঙ্গে বিটু প্রতারণা করেছে। বিয়ে করে এক মাস সঙ্গে থেকে কৌশলে টাকা, কাপড়সহ অনেক কিছু নিয়ে পালিয়েছেন। তিনি বাংলাদেশে এসে নতুন করে ভিসা নিয়ে আসার কথা ছিলো। কিন্তু দেশে ফিরে বিটু যোগাযোগ বন্ধ করে দেন।
তিনি আরও বলেন, বিষয়টি বুঝতে পেরে বিটুর সঙ্গে সংসার করতে তিনি বাংলাদেশে আসেন। কিন্তু বিটুর পরিবার তাকে বের করে দেয়। ফলে নিরাপত্তার আশঙ্কায় প্রশাসনের সহায়তা নেন রিয়া বালা।
রিয়া বালা বলেন, ‘আমি স্ত্রীর মর্যাদা চাচ্ছি।’
তেঁতুলিয়া উপজেলা পরিষদের মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান সুলতানা রাজিয়া বলেন, ছেলেটি পালিয়ে থাকায় বিষয়টি সমাধান করা সম্ভব হয়নি। তবে, ছেলের বাবা ছেলে ফিরে আসলে তাকে নিয়ে ভারতের যাওয়ার আশ্বাস দিয়েছেন। পরে ওই ভারতীয় তরুণী দেশে ফিরে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেন। উপজেলা প্রশাসনসহ আমরা বাংলাবান্ধা জিরো পয়েন্টে গিয়ে তাকে তার বোনের কাছে তুলে দিয়েছি।
তেঁতুলিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ফজলে রাব্বি বলেন, অভিযুক্ত ওই যুবক পলাতক থাকায় বিষয়টি সমাধান করা সম্ভব হয়নি। ছেলের পরিবারকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে ছেলেকে খুঁজে বের করার। যেহেতু, ওই তরুণী ভারতের নাগরিক, তাই তার নিরাপত্তার বিষয়টি মাথায় রেখে তাকে পরিবারের কাছে পাঠানো হয়েছে।
আপনার মতামত লিখুন :